ভরা মৌসুমে ইলিশের খড়া
ভরা মৌসুমে ইলিশের খড়া
এখন চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। তবুও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা। বলতে গেলে ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে হওয়ার এবার তারা আর্থিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছেন।
ইলিশ বাংলাদেশের অন্যতম মূল্যবান মাছ এবং জাতীয় মাছ হিসেবে এর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষাকাল, বিশেষ করে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ সময়টাতে ইলিশ ধরার পরিমাণ বেশি থাকে, এবং জেলেরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকগুলোতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের সরবরাহ কমে যাওয়া, যা "ইলিশের খরা" নামে উল্লেখ করলাম, এটি জেলেদের মাঝে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
গভীরসমুদ্রের গিয়েও তারা প্রত্যাশিত অনুযায়ী মাছ পাচ্ছে না
এর ফলে ইলিশের সরবাহ কমে যাওয়ায় এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। যা দেশের নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।এজন্য বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে জানতে পারলাম, বিগত ২০১৭ সালের পর থেকে তারা তাদের আশানুরূপ মাছ পাচ্ছেে না।
দিনের পর দিন ইলিশের প্রজনন শক্তি কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে জানিয়েছে ১ম, অপরিকল্পিত সরকারের আইন। যেটা ভারতের সাথে মিল না রেখে বন্ধ রাখা।
২য়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ৩য়, শিল্পকারখানা বর্জ্য সরাসরি সমুদ্রে আসাতে ইলিশের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আর একটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বলছে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার ইলিশের খরা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে, কারণ এতে ছোট ইলিশ মাছও ধরা পড়ে, যা প্রজননের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছে না।
এসব কারণ দীর্ঘ কয়েক বছর ইলিশের মৌসুমে বিরাট একটি প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, এখন ইলিশের দাম চওড়া। বাজারে যে দামে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তা নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। এতে ক্রেতা চাহিদা মিটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের একজনপ্রতিনিধি জানিয়েছে, এবছর সাগরে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়েনি এটা সত্য। এ কারণে বাজারে ইলিশের দামও একটু বেশি।
প্রতিবছর ন্যায় অক্টোবর মাসে সাগরে ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে। সেই বন্ধটা ভারতের সাথে মিল রেখে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন অনেক জেলেরা। এতে আরও ইলিশের প্রজনন বাড়বে বলে তারা মনে করে।
পরিশেষে বলা যায়, ইলিশের খরা মোকাবেলায় সরকারকে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রথমত,
যে নদী গুলোতে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধি পায় সেই নদী গুলোতে কঠোরভাবে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা উচিত এবং জেলেদের সেই সময়ে বিকল্প আয়ের সুযোগ প্রদান করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, শিল্পকারখানার বর্জ্য পরিশোধন ও নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া, নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধ করতে কার্যকর আইন প্রয়োগ জরুরি।
না হয় অদূর ভবিষ্যৎ এ ইলিশ অন্যান্য দেশের মত স্বপ্ন হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম উপজেলা প্রতিনিধি
বিক্রম দাশ।
What's Your Reaction?