হজ্ব বিষয়ে আল-বারাকা ট্রাভেলসের প্রাথমিক আলোচনা
আনোয়ার উল্লাহ (শরীফ)
জনগণের কন্ঠ প্রতিনিধি (চরফ্যাশন,ভোলা)
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় আল-বারাকা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের অফিসে ২০২৫ সালে হজে যাওয়ার বিষয়ে জরুরি সবার আয়োজন করা হয়।
আজ (৯ নভেম্বর) রোজ শনিবার বিকাল ৪টা ৩০মিনিটে আল বারাকা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর স্বত্বাধিকার কামাল প্রফেসরের তত্ত্বাবধানে একটি সভার আয়োজন করা হয়।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন ভোলা জেলার আলেম উলামা ও তাবলীগ জামাতের মুরুব্বিরা সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
আলোচনা পেশ করেন, আল বারাকা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকার কামাল প্রফেসর। তিনি বলেন-ছালাত, ছিয়াম ও যাকাতের মত হজ্জ পালন করা সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর ফরয। তিনি হজের ৩টি প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করেন নরমাল, মিডিয়াম ও হাই এবং ২০২৫ সালের হজে যাওয়ার বিষয়ে সরকার কর্তৃক ধার্যকৃত অর্থ উপস্থাপন করেন।
হজ ফরজ হওয়ার বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা তার কালামে পাকের ভিতরে বলেন,
وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ
‘আর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ্জ করা ঐ ব্যক্তির উপর ফরয করা হ’ল, যার এখানে আসার সামর্থ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করে (সে জেনে রাখুক যে,) আল্লাহ জগদ্বাসী থেকে মুখাপেক্ষীহীন’ (আলে ইমরান ৩/৯৭)। এটিই হজ্জ ফরয হওয়ার মূল দলীল।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ فَإِنْ أُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ
‘আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরাহ পূর্ণ কর। কিন্তু যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহ’লে যা সহজলভ্য হয়, তাই কুরবানী কর’ (বাক্বারাহ ২/১৯৬)। এ আয়াতটি হজ্জ ফরয হওয়ার পাশাপাশি ওমরাহ ফরয হওয়ারও দাবী রাখে, যে ব্যাপারে অধিকাংশ ছাহাবী ও ওলামায়ে কেরাম অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالاً وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ، لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ-
‘আর তুমি মানুষের মাঝে হজ্জের ঘোষণা প্রচার করে দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সকল প্রকার (পথশ্রান্ত) কৃশকায় উটের উপর সওয়ার হয়ে দূর-দূরান্ত হ’তে। যাতে তারা তাদের (দুনিয়া ও আখেরাতের) কল্যাণের জন্য সেখানে উপস্থিত হ’তে পারে এবং রিযিক হিসাবে তাদের দেওয়া গবাদিপশুসমূহ যবেহ করার সময় নির্দিষ্ট দিনগুলিতে তাদের উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে’ (হজ্জ ২২/২৭-২৮)।
হজ্জের গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি হাদীছ নিম্নে পেশ করা হ’ল।-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بُنِىَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالْحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ. متفق عليه-
ইবনে ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপরে প্রতিষ্ঠিত (১) তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান করা এ মর্মে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (স:) তাঁর বান্দা ও রাসূল (২) ছালাত কায়েম করা (৩) যাকাত প্রদান করা (৪) হজ্জ সম্পাদন করা ও (৫) রামাযানের ছিয়াম পালন করা’।[3]
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে
হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণে বললেন, ‘হে জনগণ! তোমাদের উপর হজ্জ ফরয করা হয়েছে। অতএব তোমরা হজ্জ সম্পাদন কর। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কি প্রতি বছর? তিনি নীরব থাকলেন এবং সে তিনবার কথাটি বলল। এরপর রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আমি হ্যাঁ বললে তা ওয়াজিব হয়ে যাবে (প্রতি বছরের জন্য) অথচ তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হবে না। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা আমাকে ততটুকু কথার উপর থাকতে দাও যতটুকু আমি তোমাদের জন্য বলি। কারণ তোমাদের পুর্বেকার লোকেরা তাদের অধিক প্রশ্নের কারণে এবং তাদের নবীদের সাথে বিরোধিতার কারণে ধ্বংস হয়েছে। অতএব আমি তোমাদের যখন কোন কিছু করার নির্দেশ দেই, তোমরা তা যথাসাধ্য পালন কর এবং যখন তোমাদের কোন কিছু করতে নিষেধ করি তখন তা পরিত্যাগ কর’।এ হাদীছটি স্পষ্টভাবে জীবনে একবার হজ্জ ফরয হওয়ার প্রমাণ বহন করে।
জনগণের কন্ঠ.কম
What's Your Reaction?