আবার দেখা হবে মা-ছেলের

Jan 7, 2025 - 03:45
 0  16
আবার দেখা হবে মা-ছেলের

তাওহিদুজ্জামান রোমান
সম্পাদক, জনগণের কণ্ঠ.কম

উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার লন্ডন যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তিনি। কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’ ফ্লাইটে মঙ্গলবার রাত ১০টায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। চিকিৎসকদের পরামর্শে তার দেশের ফেরার তারিখ নির্ধারণ হবে।

এই সফরের মধ্য দিয়ে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সাত বছর পর দেখা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। দলীয় সূত্র বলছে, লন্ডনে পৌঁছে সরাসরি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে কিছুদিন থাকার পর তিনি যাবেন আমেরিকায়। মেরিল্যান্ডের পূর্ব বাল্টিমোরে অবস্থিত জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তিনি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রার বিষয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির রাজকীয় বহরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন এই বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ফ্লাইটে করে মঙ্গলবার রাতে লন্ডন যাবেন তিনি। এ সফরের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

এর অংশ হিসেবে রোববার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন খালেদা জিয়া। এছাড়াও এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ এবং রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারীর সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি নেত্রী।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এরপর থেকেই তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবার এবং দল থেকে একাধিকবার দাবি জানানো হচ্ছিল।

কারাবাসকালীন বেগম খালেদা জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষ তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করলেও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।

২০২০ সালের মার্চে তৎকালীন সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি পান তিনি। কারামুক্তির পর থেকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় থাকলেও এ সময়ে তাকে একাধিকবার জরুরি ভিত্তিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার হার্টে রিং পরানো হয়েছে। লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসক এনে ‘টিপস’ করানো হয়েছে।

কিন্তু তারপরও তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি মেলেনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এর পরপরই তার বিদেশযাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু হয়।

তিনি কোন দেশে যেতে পারেন, তা নিয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড ও পরিবার একাধিকবার বৈঠক করেছে। এ সময় তার শারীরিক অবস্থাও দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য অনুকূল ছিল না।

এমন পরিস্থিতিতে তার শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ ভ্রমণের উপযোগী করে তোলা, তাকে বিদেশে নেওয়ার উপায় এবং পাসপোর্ট জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে তার নতুন পাসপোর্ট করা হয়েছে এবং ভিসা জটিলতাও দূর হয়েছে। তিনি যুক্তরাজ্য ছাড়াও আমেরিকা ও সৌদি আরবের ভিসা পেয়েছেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow