নাকুগাঁও স্থলবন্দরে নেই এইচএমপিভি’র সতর্কতা

তাওহিদুজ্জামান রোমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: ভারতসহ কয়েকটি দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়লেও তা প্রতিরোধে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশনে কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই যাত্রীরা এই বন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত ও ভুটানে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন। বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে ট্রাকচালক ও হেলপাররা দুই দেশে আসা-যাওয়া করছেন। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সরকারি নির্দেশনা না থাকলেও মৌখিকভাবে সচেতন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থলবন্দরের গেটে দু’জন দাঁড়িয়ে আছেন। বন্দরের ভেতরে কর্মকর্তা বসে আছেন। কিন্তু কোনো রুম কিংবা বাইরে এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি কিংবা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। কাগজপত্র সঠিক থাকলে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করা যাচ্ছে।
স্থানীয় অনেকেই বলেছেন, তারা এই ভাইরাস সম্পর্কে অবগত নন। আবার অনেক সচেতন নাগরিক বলেছেন, এই ভাইরাস যেহেতু ভারতে শনাক্ত হয়েছে, সেহেতু এই বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বসানো উচিত।
হালুয়াঘাটের বাসিন্দা ও ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রী আকরাম হোসেন বলেন, ‘‘আমার এক ভাইয়ের কাছ থেকে শুনেছি এই ভাইরাসের নাম। আবার আমি বিভিন্ন খবরেও দেখেছি নতুন এই ভাইরাসের কথা। যদি করোনার মতো এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে তো মুশকিল হয়ে যাবে। এজন্য আগে থেকেই সতর্কতার সঙ্গে অবশ্যই কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমি মনে করি।’’
আরেক যাত্রী সাব্বির আহম্মেদ বলেন, ‘‘ভাই, কী যে ভাইরাসের কথা আপনারা বলেন! ভাইরাস কই থাকবে? আমি মাস্ক সবসময় ব্যবহার করি এবং পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করি। তাই এসব ভাইরাস-টাইরাস আমাদের শরীরে আসবে না, কারণ আমাদের তো শরীর ফিট। তবে, বেশিরভাগ মানুষই জানে না এই ভাইরাসের কথা। আগে থেকেই সচেতন হলে কোনো সমস্যা হবে না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর বলেন, ‘‘এমন নাম শুনিনি এখনো। করোনা ভাইরাসের নাম শুনেছিলাম। করোনার সময় তো এই বন্দর বন্ধ ছিল। যদি নতুন করে এই ভাইরাস আসে, তাহলে তো আগে থেকেই ঠিকঠাক (সতর্ক) থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে বন্দরের ভেতরে কিংবা বাইরে পরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি বসানো উচিত।’’
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এখনো ওইভাবে কোনো পদক্ষেপ নেই। কারণ, কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারিভাবে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। যার ফলে এই বন্দরের ইমিগ্রেশন দিয়ে পরীক্ষা ছাড়াই যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই, সেহেতু মৌখিকভাবে সচেতন করে যাচ্ছি আমরা। যদি আমাদের স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চেয়ারম্যান মহোদয় কোনো নির্দেশনা দেন, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনারা জানেন যে, এই বন্দর দিয়ে মূলত ভারত ও ভুটান থেকে যাত্রী পারাপার বেশি হয়। গত মাসে এই বন্দর দিয়ে প্রায় তিন শতাধিক যাত্রী পারাপার করেছেন। তবে এ মাসে এখন পর্যন্ত তেমন যাত্রী পারাপার হয়নি। তারপরও যারা পারাপার হচ্ছেন তাদেরকে আমরা মৌখিকভাবে সচেতন করছি এবং পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে নিয়মিত মাস্ক পরিধান করেন এবং দু’হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করেন।’’
What's Your Reaction?






