গারো পাহাড়ে অসুস্থ বন্য হাতির সফল চিকিৎসা

May 1, 2025 - 17:32
 0  8
গারো পাহাড়ে অসুস্থ বন্য হাতির সফল চিকিৎসা

তাওহিদুজ্জামান রোমান
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি | জনগণের কন্ঠ 

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের কাটাবাড়ি এলাকায় অসুস্থ একটি বন্য হাতির সফল চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে। পায়ে চার থেকে পাঁচটি গভীর ক্ষতের কারণে হাতিটি তীব্র যন্ত্রণায় ভুগছিল এবং তিন পায়ে ভর দিয়ে কষ্ট করে চলাফেরা করছিল।

বৃহস্পতিবার (১ মে) গাজীপুর সাফারি পার্ক ও নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আগত দুটি পশু চিকিৎসক দলের যৌথ প্রচেষ্টায় এবং বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।

প্রথমে ট্রাঙ্কুলাইজার ইনজেকশন দিয়ে হাতিটিকে অজ্ঞান করা হয়। এরপর ক্ষতস্থানে অ্যান্টিবায়োটিকসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করা হয় এবং ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করা হয়। সবশেষে আরেকটি ইনজেকশনের মাধ্যমে তার জ্ঞান ফিরিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে হাতিটি ধীরে ধীরে গারো পাহাড়ের গভীরে ফিরে যায়।

চিকিৎসকরা জানান, অপারেশন সফল হয়েছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাতিটির আঘাতপ্রাপ্ত পা ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সেরে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সময় চিকিৎসা টিমে ছিলেন– ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ভেটেরিনারি সার্জন, গাজীপুর সাফারি পার্ক; ডা. সাকিব হোসেন সাগর, ভেটেরিনারি সার্জন, নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অফিস; মো. আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, ল্যাব টেকনিশিয়ান, গাজীপুর সাফারি পার্ক; মো. মোস্তফা কামাল, সহকারী (সিএইই), নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অফিস।

সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন– মো. শাহীন কবির, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, শেরপুর; সুমন সরকার, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা; মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার; মো. দেওয়ান আলী, রেঞ্জ কর্মকর্তা, মধুটিলা রেঞ্জ; মো. কাউছার হোসেন, বিট কর্মকর্তা, সমশ্চূড়া বিট।

গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “হাতিটির পায়ে গুরুতর সংক্রমণ ছিল। আমরা সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পেরেছি, আশা করছি সে দ্রুত পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।”

নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাকিব হোসেন সাগর বলেন, “এটি ছিল একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ চিকিৎসা। বন বিভাগের সহায়তায় আমরা সফলভাবে হাতিটিকে ট্রাঙ্কুলাইজ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে সক্ষম হয়েছি।”

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শাহীন কবির বলেন, “বন্যপ্রাণী রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”

মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী বলেন, “আমরা হাতিটির গতিবিধি কয়েকদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। অবশেষে তাকে চিকিৎসা দিতে পেরে সন্তুষ্টি বোধ করছি।”

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow