নালিতাবাড়ীতে গভীর রাতে বন্য হাতির আক্রমণে বৃদ্ধার মৃত্যু

May 30, 2025 - 13:14
May 31, 2025 - 10:06
 0  114
নালিতাবাড়ীতে গভীর রাতে বন্য হাতির আক্রমণে বৃদ্ধার মৃত্যু

তাওহিদুজ্জামান রোমান
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি | জনগণের কন্ঠ 

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বাতকুচি গ্রামে বন্য হাতির আক্রমণে সুরতন নেছা (৬০) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত আনুমানিক তিনটার দিকে নিজ বাড়ির আঙিনায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি পাহাড়ি অঞ্চলে ৪৫ থেকে ৫০টি বন্য হাতির একটি দল অবস্থান করছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাতির দলটি বাতকুচি গ্রামে প্রবেশ করলে স্থানীয়রা মশাল ও চিৎকার করে তাদের তাড়িয়ে দেয়। কিন্তু গভীর রাতে হাতির দলটি আবার গ্রামে ফিরে আসে এবং সুরতন নেছার বাড়িতে হামলা চালায়। সে সময় সুরতন নেছা বাড়ির বাইরে ছিলেন। এক পর্যায়ে একটি হাতি তাকে তুলে নিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুরতন নেছা ওই গ্রামের মৃত রঙ্গু শেখের স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এক ছেলে আগেই মারা গেছেন। অপর ছেলে মধুটিলা এলাকায় ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করেন। মেয়ে স্থানীয় একটি বাংলোয় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। ঘটনার সময় বৃদ্ধা বাড়িতে একা ছিলেন।

বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, “বন্যপ্রাণীর আক্রমণে প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক। নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। হাতির পালটি এখনো বাতকুচি এলাকার জঙ্গলে অবস্থান করছে।”

পোড়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন বলেন, “বন্য হাতির আক্রমণে একজন বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকাবাসী ভীত ও শঙ্কিত। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। পাশাপাশি এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বন্য হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে প্রশাসন, বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে।”

প্রতিনিয়ত এমন বন্য হাতির তাণ্ডবে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে প্রাণহানির ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow