চরফ্যাশন মৎস্য অফিস সহকারীর রাজকীয় অট্টালিকা, বানিয়েছেন নামে বেনামে অঢেল সম্পদ।

সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬ হিজরী |

Apr 14, 2025 - 01:14
Apr 14, 2025 - 01:27
 0  5
চরফ্যাশন মৎস্য অফিস সহকারীর রাজকীয় অট্টালিকা, বানিয়েছেন নামে বেনামে অঢেল সম্পদ।

আনোয়ার উল্লাহ শরীফ

জনগণের কন্ঠ প্রতিনিধি (চরফ্যাশন,ভোলা) 

প্রকাশ: সোমবার, ১৪ই এপ্রিল ২০২৫

চরফ্যাসন উপজেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী আব্বাস উদ্দিন ১৫ বছর একই কর্মস্থলে থেকে তার গ্রামের বাড়িতে নির্মান করেছেন বিলাসবহুল আলিশান বাড়ি ও নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পত্তি। তার আলিশান বাড়ি ও অঢেল সম্পত্তির নেপথ্যে রয়েছে অনিময় ও দূর্নীতির মহাযজ্ঞ।

জানাযায়, উপজেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী আব্বাস উদ্দীন আমিনাবাদ ইউনিয়নের হালিমাবাদ গ্রামের আবদুল খালেক মাষ্টারের ছেলে। তার ভাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমানের ছত্রছায়ায় তিনি অফিস সহকারী পদে এই চাকুরী ভাগিয়ে নেন এবং চাকরীর শুরু থেকেই তিনি নিজ উপজেলা চরফ্যাসনে কর্মরত থেকে স্থানীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমান কামিয়েছেন।

স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, চরফ্যাসন উপজেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী পদে চাকুরি নেয়ার পর থেকে নদীতে বিভিন্ন মৎস্য অভিযানের সময় উপজেলার প্রতিটি মৎস্য ঘাটের জেলেদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নেন। পাশাপাশি জেলে পূর্নবাসনের নামে জেলেদের হয়রানী ও অনৈতিক ভাবে অর্থহাতিয়ে নেয়াসহ মৎস্য অভিযান চলাকালীন সময়ে জেলেদের কাছ থেকে ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজী ও আতাঁত করে জেলেদের বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করে।

তাঁর স্থানীয় এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে স্থানীয় জেলে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং অফিসের কর্মকর্তারাও তাকে ম্যানেজ করেই চলতে হয়েছে।যার সুযোগ নিয়ে আব্বাস উদ্দিন নদী থেকে ঘাট এবং অফিস পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে সকলকে জিম্মি করে বিপুল পরিমান টাকা বানিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন মৎস্য ঘাটের জেলেরা জানান, চরফ্যাসন মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী আব্বাস উদ্দিন মা ইলিশ সংরক্ষন অভিযানসহ বিভিন্ন অভিযানের পূর্বে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে মাছ ধরার অনুমতি দিয়ে জেলেদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন।

এছাড়াও নদীতে কোন অভিযান পরিচালনা করার আগেই জেলেদের ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেন এই অফিস সহকারী আব্বাস। এবং বিভিন্ন সময়ে সে বিভিন্ন ভয়ভিতি দেখিয়ে জেলেদের কাছ থেকে বড় সাইজের মাছ নিয়ে আসেন। জেলেদেরকে জাল, মেশিন, বকনা বাছুর ও জেলে পুর্নবাসনের তালিকায় নাম যুক্ত করার লোভ দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন আব্বাস উদ্দিন।

রোববার সরমজিনে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের জাটকা সংরক্ষণ অভিযান চলাকালীন সামরাজ মৎস্য ঘাট, কচ্চপিয়া, নতুন স্লুইস, বকশি, বাংলাবাজার, গাছির খাল, কাশেম মিয়ার বাজার, ভাড়ানি বাজার ও চৌকিদার খাল বাজার মৎস্য ঘাট এলাকার জেলেরা মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করছেন।

নুরাবাদ ১ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে মোহাম্মদ আলী জানান, উপজেলা মৎস্য অফিসকে ম্যানেজ করে আমরা গাছির খাল এলাকার ৬৫ টি জেলে নৌকা এই নিষেধাজ্ঞা সময়ে তেতুলিয়া নদীতে মাছ ধরি। মৎস্য বিভাগের লোকজন অভিযানে নামলে আমরা খবর পেয়ে যাই। কি ভাবে জানতে পারেন-এমন প্রশ্নের জবাবে এই জেলে জানান, মৎস্য অফিসে আমাদের পুরনো লোক রয়েছে তিনি আমাদেরকে নদীতে অভিযানে নামার আগে-ভাগে ফোন করে জানান ।

তিনি আরো বলেছেন, প্রত্যেক ঘাট এলাকায় জেলেরা ধার্যকৃত চাঁদা দিয়ে অফিসকে ম্যানেজ করেই অবরোধের মধ্যে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করেন।

অভিযোগ প্রসেঙ্গ জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্বাস উদ্দিন ব্যস্ততার কথা বলে ফোন কল কেটে দেন এবং পরবর্তীতে আর ফোনকল রিসিভ করেননি।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেছেন- আব্বাস উদ্দিন দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশী সময় ওই কর্মস্থলে অবস্থান করছেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে নানান অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং শীঘ্রই তাঁর বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনগণের কন্ঠ.কম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow