নেতা নয়, সেবক হতে চাই—মরিচপুরানে নির্দলীয় প্রার্থী হাজী ফরহাদ

তাওহিদুজ্জামান রোমান | শেরপুর জেলা প্রতিনিধি
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন গাজীপুরের সফল ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হাজী মো. ফরহাদ হোসেন। নির্বাচনী মাঠে তিনি পরিচিত হচ্ছেন একজন নিরপেক্ষ, নির্দলীয় ও মানবিক প্রার্থী হিসেবে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে তার ছবি ঘিরে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে ফরহাদ হোসেন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কখনোই জড়িত ছিলেন না—ব্যবসায়িক ও সামাজিক সৌজন্য থেকেই এসব ছবি তোলা হয়েছিল।
হাজী মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমি কোনো দলের নই। আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই। ইউনিয়নের উন্নয়নই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।”
হাজী ফরহাদ হোসেন মরিচপুরান ইউনিয়নেরই সন্তান। জীবিকার প্রয়োজনে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ১৯৯৯ সালে তিনি গাজীপুরে চলে যান। ব্যবসার শুরুটা ছিল কঠিন, তবে হালাল পথে কঠোর পরিশ্রম করে আজ তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি ফরহাদ রোটর স্পিনিং ও মেসার্স ফরহাদ এন্টারপ্রাইজ-এর স্বত্বাধিকারী। দীর্ঘ কর্মজীবনে রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থেকে সকল দলের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
তার পরিচয় শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়—তিনি বহুদিন ধরে গ্রামের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এসেছেন, নিঃশব্দে সাহায্য করে গেছেন।
বাশকান্দা গ্রামের মো. সোলায়মান মিয়া (৫২) বলেন, “আমার চোখে ছানি পড়েছিল। হাজী ফরহাদ ভাই চিকিৎসার সব খরচ দিয়েছেন। তিনি নেতা হোন বা না হোন, তিনি আমাদের মানুষের জন্যই কাজ করেন।”
৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নবাব আলী বলেন (৭০), “ঘর ঝড়ে ভেঙে গিয়েছিল। হাজী ভাই আমাকে নগদ টাকা আর টিন দিয়ে ঘর তুলতে সাহায্য করেছেন। উনি চেয়ারম্যান হলে সমাজের গরীব দুঃখী মানুষের উন্নয়ন হবে।”
আদিবাসী যুবক ডি. রবিন মারাক (২৮) বলেন, “আমার পায়ে ইনফেকশন হয়েছিল। ফেসবুকে সাহায্যের আবেদন করেছিলাম। ফরহাদ ভাই নিজে ফোন করে চিকিৎসার টাকা পাঠান। এমন মানুষই জনপ্রতিনিধি হওয়া উচিত।”
ভোগাইপাড় এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. মুস্তফা হোসেন (৫৪) বলেন, “কোন্নগর গ্রামের অসহায় বিধবা মুর্ফুলী বেগমের জন্য একটি ঘর নির্মাণের বিষয়ে আমি হাজী ফরহাদ হোসেনকে অনুরোধ করি। তিনি তখনই আর্থিক সহায়তা দেন। পরে আমি আরও দুইজনের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে সেই ঘরটি নির্মাণ সম্পন্ন করি। হাজী ফরহাদ একজন উদার মনের মানুষ—সহযোগিতায় যিনি কখনো কার্পণ্য করেন না।”
ফরহাদ হোসেন জানান, মরিচপুরান ইউনিয়নের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পানির সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত। “আমি দলীয় প্রতীক নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে চেয়ারম্যান হতে চাই। নেতা নয়, সেবক হতে চাই।”
স্থানীয় তরুণ সমাজ বলছে—উনি কোনো রাজনৈতিক খাঁচায় বন্দি নন। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে যিনি কাজ করেন, সেই প্রকৃত নেতা। হাজী ফরহাদ ভাই সেই রকম মানুষ।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির সময় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে—হাজী ফরহাদ হোসেন বরাবরই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে তিনি নিজ উদ্যোগে সাহায্য করেছেন। এছাড়াও, যেসব সামাজিক সংস্থা গরিব-অসহায়দের জন্য ঘর নির্মাণে সহায়তা করে, সেসব উদ্যোগেও তিনি নিয়মিতভাবে আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকেন। নিঃস্বার্থভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যেন তার প্রকৃত পরিচয়।
What's Your Reaction?






